আকতার জাভেদ
(জোছনা একটা নদী, ০৬/১০/২০১৭ইং)
এখন ঢিমেসুরের তীব্রতায় ভাসছে জোছনা-
বলো, তুমি তো বৃশ্চিক ছিলে, তাই কী?
বৃষ্টি ভুলে হেমন্তের বাতাবরণে..
আমি হাঁটছি, কাঁদছি-
কাঁদতে কাঁদতে
সাঁতরে যাচ্ছি নিজের গভীরে-
শুনছো তো?
সেই নদীর কলতান-
বলেছি তাকে,
জোছনা এই নদীর নাম।
টুকরো চিত্র –
(সে এবং আপনি ২২/০৮/২০১৩ইং)
১
তিনি উত্তর দেন না;
না দিয়ে গলিপথে অলিভ পাতা
সবুজ হয়ে বেলকনিতে দাঁড়ান।
বলি,
কতদিন না দেয়ার সমীপে পৃথিবী অপেক্ষারত ?
২
জানি না তো- মূষলধারে বৃষ্টি হলে আমাদের শহরে যান নেই
জল যান নেই- নেই গ্রামোফোন এবং ১১০০০ ভোল্টেজে একাকী দাঁড়কাক।
সে এবং আপনি, দুজনেই চুপচাপ !
৩
অত:পর তিনি সরাসরি থামেন,
একদম ফুটপাতে
ছলকে উঠা পানিতে সফেদ গাত্রদাহ-
পুড়তে থাকে ভেজা ত্বকে আমাদের স্বপ্ন !
[বালিয়াড়ি, ১৯ আগষ্ট ২০১৫/২০২০]
১
কি খবর নেবো?
খবর তো সব উড়ো চিঠি-
উড়ছেই মালভূমি –
উড়ছেই উপসাগর –
পাখি উড়তেই শুনি গালিবের শব্দ,
শব্দে শব্দে আনকোড়া রোদ-
তবুও বিরান ভূমি।
২
তোমার উৎকন্ঠায় হয়না বৃষ্টি,
তোমার রিক্ততায় কাঁদে না কৃষ্টি,
তোমার উদাসীনতায় আসেনা ডাকহরকরা,
কবিতায় হয়না অলিন্দের সুখ
তোমার হৃদয়জুড়ে আজ ঢেউ ঢেউ বালিয়াড়ি।
খবরের পাতাগুলো আজ বিস্তীর্ণ মরুভূমি।
৩
তুমি বললে,
উঁচু নিচু করে নামবে রেখাগুলো।
আমি বললাম,
কি খবর নেবো বলো তাই?
সে এলে বলো কথা; আমার কথা
তোমার অলিন্দের আর নেই কারো ঠাঁই-
ভূমির বিপরীতে যত বিদীর্ণ ব্যথা
নিমঋতুর লোকাচারে পৃথিবী থাকুক যত নিশ্চুপ !
তবুও – পৃথিবী যেন এক পোড়াবাড়ি!
(মেলোড্রামা, ৫ আগষ্ট ২০২০)
১
ভুলে যাচ্ছি মৌনতায় পৃথিবী!
বৃষ্টি
তোমার নগরে আজ তাই মহাপ্লাবন,
ডুবছে,
ডুবতে থাকা শেষ বাহন।
২
এই অগ্রহণযোগ্যতার শহরে
আমি তুমি
ঋণগ্রস্থ –
রাতের আকাশে যেন সূর্যগ্রহণ!
তবুও
ত্রিশের উত্তাপে বুঝে নিচ্ছি চল্লিশের দহন।
৩
বাকা চোখে দেখো না হে নারী,
পৃথিবী মুষড়ে গেলে
জোছনার হবে আড়ি।
- রাতের আকাশে নিভে যাবে নক্ষত্র,
- আমাদের ছাদে সেই অন্ধকার ক্ষরণ।
৪
কড়াগণ্ডায় মিলছে না জীবনের বেলে মাটি,
ভাংছে
ভাংছে তাই আমাদের বন্ধন।
৫
রাতারগুলে শরৎ নেমে এলে
আমার মনে পড়লো গুলবাগের কথা’
প্রিয় গুলনাহারের কথা।
হাসতে হাসতে সে নেমে গেলো শ্বাসমূলের কাছাকাছি।
৬
পাণ্ডুলিপির হিরোগ্লাফিক হরফের কথা নাই বা বললাম,
এক্কা দোক্কা করে
আমরা কিন্তু ভুলে যাচ্ছি
মায়ান সভ্যতার কথা।
আর
তুমি ভুলে যাচ্ছ,
জ্বল জ্বল সেই নাকফুলের কথা।
৭
ইরোর বুকের ভেতর জন্ম নিচ্ছে প্রাণ,
আমি তুমি
যতই বিস্ফোরন্মুখ হই
থামবে না আর জীবনের গান।
একদিন ডুব সাঁতার দিয়ে ঠিক পাড়ি দেবো
দক্ষিণের উঠোন।
৮
সে বললো, সলিলকির কথা।
শুনতেই ভুলেই গেলাম–
এই পৃথিবীতে আমার দেহের পাললিক শিলা হবে,
তাহার রন্ধনশালায় বারবিকিউ হবে-
জানালার ফাক গলে একদিন
হাত নেড়ে যাবে পড়শী বাড়ির ঋণ।
৯
গভীর রাতরে চাদরে,
ঝুলতে থাকা স্বপ্নে
কেউ কেউ ছেড়ে যাবে পৃথিবী।
কাপতে থাকা বুকের ভেতর থেকে বলবে,
হে মুসাফির তোমার এপিটাফ ত রয়ে গেলো শব্দহীন।
১০
সেই প্রশ্ন,
আর
ভালোবাসা
ছুড়ে ফেলে দিচ্ছি রাত দিন,
অথচ শুক্লপক্ষ পেরোলে
তুমি ম্যালোড্রামার শব্দে বুনছো
রহস্য লাগামহীন।
কেউ বোঝে কেউ জানে
তবুও ভালোবাসে অনন্ত দিন।
(চারণভূমি, ২৯ অক্টোবর ২০১২)
১
অকারণে হেঁটে বেড়াচ্ছি উত্তরের নিঃস্ব চারণভূমি-
কেউ হাঁটে? হয়তো বিরান উপত্যকায়
এক মেষপালক- বৃষ্টির অপেক্ষায়
২
ডুব সাঁতার দিয়ে যায় জীবনের অলি-গলি
একটা মাছ হয়ে পড়ে আমার দেহ
আমাদের দেহ- আমি বা তুমি
ডুবতে থাকে কচুরীপানা-
৩
আমি তো চাঁদ দেখিনা একাকী রাত্রিতে-
জোছনা নেই বলে
নগ্ন হয়ে পড়ে সব কটি পৃষ্ঠদেশ-
কেউ কিছুই দেখে না;
৪
কটিদেশে একটা চুম্বন-
তোমার তো মনে আছে; আছে তো?
একটা তিল বা ক’ফোটা জল,
জানোই তো কুয়াশা ঘনালেই
চমকে যেতে পারি যেকোন কিছুতেই–
বাহ!! আমি প্রথম কবিতাটা মনের অজান্তেই আবৃত্তি করে ফেললাম এবং একে একে অনেকগুলো৷ আমি জানি না, আমার কাছে মনে হয় আমার স্বরে আপনার এই সরল কবিতাগুলো যাই। নিজস্বই আমার ভাবনা।শুভ কামনা।🙂