অনিন্দ্য জসীম
পরকীয়া- ১
তার সাথে আমার গোপন প্রেম
আমরাদের ব্যক্তিগত বৌ ও স্বামী আছে
ফুল পাখি পালতোলা নদী আছে যার যার নিঃসঙ্গ আঙ্গিনায়
দুঃখ ও অপ্রাপ্তি আছে শূন্যতার চারপাশ ঘিরে
মনের দুচালা বারান্দার টবে একটা গোলাপ চারা
একান্ত সুরভীময়, যা আমাদের বৌ বা স্বামী কেউই জানে না,
জানবেও না কখনো।
দূরে একচক্ষু হরিণের ডাক
কাছে আসতে আসতে ক্রমশ বিলিন
আমাদের মাঝখানে
আরো দূরে নড়বড়ে একটা পুরনো সাঁকো
চৈত্রের শুষ্কতা নিয়ে তৃষ্ণার্থ মাছরাঙার ঠোঁট
ব্যর্থ শিকারির চোখ এড়িয়ে বাঁশের কঞ্চিতে পড়ন্ত দুপুর
চোখ বন্ধ করে হেঁটে যাবার একটা
দীর্ঘ মেঠোপথ
নির্জনতার ভিতর- দুজনের মৌনতায়
এতোসব মিল অমিলের মাঝে কোথাও
একটা খোলা জানালায়
আমাদের যৌথ মালিকানা আছে
পরকীয়া-২
সন্ধ্যার পরের পথ একা একা
পেছনের ভেজানো ঝাপ খুলেই ঢুকে পড়ি
কেউ দেখে নি এমন ভাব।
মাসির মেয়েকে দেখি না অনেক দিন
যে আমার গ্লাসে বরফ টুকরো রেখে
হাসতে হাসতে কুসুম গরম হয়ে যেতো
হলুদ দুচোখে অজস্র জোনাকী জ্বলে উঠলে
গলে যেতো তার সাদা বরফের রাত
তরই বেড়ার ফাঁকে ঢুকে গেলে কার্তিকের চাঁদ
আমি তার বুকে জোসনার আলপনা আঁকি
গুল্ম লতাপাতা আঁকি, সমৃদ্রের চোখ আঁকি,
উলুবনের ভিতর লুকিয়ে পড়া
খরগোস আঁকতে আঁকতে
জোঁসনার উপর চাঁদ বিন্দু ঝুলিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি নৈঃশব্দের পাশে।
মাসির মেয়েকে দেখি না অনেক দিন
পরকীয়া-৩
এ এক রুহানি ক্ষমতা
তুমি না ডাকলেও জেনে যাই
অপেক্ষায় রয়েছো- আনচান করছে তোমার
দুই দুয়ারি মনের জানালা ও পাখি।
আমি না বললেও তুমি নিশ্চিৎ
আমার সকল গন্তব্য তোমার দিকেই
যাবার প্রস্তুতি সাজিয়ে রাখে।
যতোই আড়ালে রাখি মনের কৈতর
তোমাকে ঘিরেই সারাদিন বাকুমবাকুম
সংসার এক পিছুটান,
যুক্তিহীন মুক্তিতে সামনে এগুলেই
পেছনে খামছে ধরে বাজপাখি চোখ
দূরে আড়বাঁশি বাজে জানাজানি হয়
দূরে কোকিলের সুর জনাজানি হয়
কোন এক নৈঃশব্দে নদীর দুপারের মতো
আমরা রয়েছি চুম্বনের অধির অপেক্ষায়